ভরতনাট্যম - নাট্টুবান – দেবদাসী

ভরতনাট্যম - নাট্টুবান – দেবদাসী

নাট্টুবান – দেবদাসী



ভরতনাট্যমের চর্চা কালে আমরা যখন ইতিহাস চর্চায় ঢুকে পড়ি তখন দেখতে পাই দুটি উল্লেখযোগ্য বিষয়।নাট্টুবান ও দেবদাসী

      নৃত্য সম্প্রদায়ের নেতা ছিলেন নাট্টুয়াঙ্গম। নট, আভই ও আঙ্গম- এই তিনটি শব্দ নিয়ে গঠিত নাট্টুয়াঙ্গম। আর সাধারন নৃত্য শিক্ষককে বলা হতো নাট্টুবান। এই নাট্টুবানরা বংশ পরম্পরায় ছিল নাচের জগতের মানুষ। এদের পেশা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে। বিনা পারিশ্রমিকে এরা শিক্ষা দিত দেবদাসীদের। বিনিময়ে দেবদাসীদের আজীবন তাদের উপার্জনের অর্ধাংশ দিতে হতো নাট্টুবানকে। নাট্টুবানের আদেশ অমান্য বা অনুমতি ছাড়া কোন অনুষ্ঠানে যোগদান করতে পারত না এই দেবদাসী।

    নাট্টুবানরা ছিলেন অত্যন্ত রক্ষণশীল। কিন্তু তাদের প্রকৃত ও যথাযথ শিক্ষাদানে উৎসাহ ছিল না। পরবর্তী কালে সমাজপতিদের চক্রান্তে এবং নাট্টুবানদের অর্থ লালসায় দেবদাসীদের পবিত্র জীবন ক্রমশ ব্যাভিচার ও কলুষতায় পর্যবসিত হতে থাকে। পিতামাতার দারিদ্র ও ধর্মান্ধতার সুযোগ নিয়ে পুরোহিত ও নাট্টুবানদের চক্রান্তে দেবদাসী প্রথমে মন্দির ও পরে গণিকালয়ে স্থান পেতে থাকে। এবং সরকার অবশেষে পাস করেন ‘দেবদাসী বিল’।



      আদিযুগ হোক বা বর্তমান প্রত্যেক যুগেই মেয়েদের স্থান পুরুষদের নীচে রাখার নিচ প্রবণতা ছাড়তে পারেনা ‘সভ্য মানুষের দল’। তাই প্রাচীনযুগের গণিকালয়ে যেমন স্থান পেতেন দেবদাসীরা, বর্তমানেও সেই ধারা অব্যাহতই আছে। পরিবর্তন হয়নি নিয়মের। তবে ভরতনাট্যম এগিয়ে গেছে নিজের গতিতে। বাধায় আটকায়নি একটুও। শুধু পরিবর্তন হয়েছে ধারার। 

Comments

Popular posts from this blog

ভরতনাট্যম – মুদ্রা

ভরতনাট্যম - নৃত্য-পর্যায়

ভরতনাট্যম – পোশাক, অলঙ্কার, রূপসজ্জা